পাবনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন চরমপন্থী সংগঠনের ছয় শতাধিক সদস্য

0
439

দেশের আর্থ সামাজিক বাস্তবতায় চরমপন্থী দলগুলোর রাজনৈতিক আদর্শ গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পলাতক জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ভিত্তি দিয়েছে চরমপন্থী সংগঠনের সদস্যদের। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ জেলার নিষিদ্ধ ঘোষিত চারটি চরমপন্থী সংগঠনের ছয় শতাধিক সদস্য মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) পাবনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন। তাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে আত্মসমর্পণের কারণ জানা গেছে।

পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টি লাল পতাকার ৪৫ সদস্য ও ১৩টি আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মঙ্গলবার পাবনা জেলা স্টেডিয়ামে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন নাম পরিচয় গোপন রাখতে চাওয়া রাজবাড়ীর এক চরমপন্থী নেতা।

তিনি জানালেন, সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনের জলদস্যু এবং মাদক ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের ঘটনা থেকে তিনি ও তাঁর রাজনৈতিক সঙ্গীরা উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তবে এর পেছনেও কাজ করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন লাল পতাকার আদর্শের প্রতি আস্থাহীনতা এবং ব্যক্তিগত জীবনের নানা গ্লানি।

তিনি মনে করেন, যারা আত্মসমর্পণ করেছে তারা খুব ভালো আছে। প্রাথমিক অবস্থায় আমরা খুব চিন্তায় ছিলাম যে, এদের সরকার মেরে ফেলবে কিনা। দেখলাম যে, না এরা খুব ভালো অবস্থানে আছে। আমার কাছে কাল্পনিক মনে হয়, কারণ সিরাজ শিকদারের নিজস্ব কিছু আইন-কানুন আছে, আমি এর মধ্যে বাস্তবিক কোনো দিক পাইনি।

খুলনার পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির আরেক সদস্যের কণ্ঠে নেতাদের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেংকারী আর অন্ধকার পথে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ।

তিনি বলেন, আমাদের ভুল পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, দশটা বছর হলো পালিয়ে বেড়াচ্ছি। বাবা-মা-সন্তান-স্ত্রীকে রেখে যে জীবন কাটিয়েছি, সে জীবন আসলে জীবন না। গরিবদের বলে বড়লোকদের থেকে চাঁদা আনতে হবে, গরিবদের দেয়া হবে সেখান থেকে, আসলে লিডারই সব চুষে খায়। আর আমাদেরকে ব্যবহার করে।

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে এক নামে পরিচিত আরেক চরমপন্থী নেতা জানালেন, আঞ্চলিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে আত্মসমর্পণ করছেন তাঁরা।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ইস্তেহারে একটা পয়েন্ট ছিল, আমাদের মতো যারা তাদেরকে সাধারণ জীবনে আসার আহ্বান জানানো হয়েছিল। সেই সুযোগটাকেই আমরা কাজে লাগাচ্ছি।

সিরাজগঞ্জ এলাকার প্রায় শ’খানেক সদস্যকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করছেন আশির দশক থেকে চরমপন্থী তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত লাল পতাকার এক সংগঠক। আত্মসমর্পণে কী দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে শান্তি ফিরবে এমন প্রশ্ন ছিল তার কাছে।

তিনি বলেন, আমরা প্রায় ছয়শ’ জন আত্মসমর্পণ করছি, অবশিষ্ট থাকছে এক তৃতীয়াংশ। যখন সবাই একশতভাগ এর সাথে যুক্ত ছিলাম, তখনই যখন কিছু করতে পারি নাই, এখন এক তৃতীয়াংশ কী করবে? প্রধানমন্ত্রী আমাদের যখন ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, সাধারণ জীবন ফেরত দেবেন তখন ওই এক তৃতীয়াংশ মানুষ তো আমাদের কাছে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তারা কোনো কিছু করতে গেলে কি আমরা ছেড়ে দেবো?

মঙ্গলবার পাবনা জেলা স্টেডিয়ামে নিষিদ্ধ ঘোষিত লাল পতাকা, সর্বহারা, নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি ও কাদামাটির ছয় শ’র বেশি সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here