ফাইনালের ট্র্যাজিক হিরো এমবাপ্পে

0
188

ইতিহাসের গর্ভে নাকি পরাজিতের ঠাঁই মেলে না। কথাটা কিলিয়ান এমবাপ্পের ক্ষেত্রে অন্তত প্রযোজ্য নয়।

সবার চাওয়া মতো কাতার বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিটা শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টাইন জাদুকর লিওনেল মেসির হাতে উঠলেও ফাইনালের ট্র্যাজিক হিরো এমবাপ্পেকে কেউ ভুলতে পারবেন না।

ভাগ্য একটু সহায় হলে আজ ২৪তম জন্মদিনে ফ্রান্সের সোনার ছেলের দুই হাতে থাকত দুটি বিশ্বকাপ ট্রফি। চার বছর আগে তারুণ্যের কেতন উড়িয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ জিতেছিলেন উনিশের অদম্য এমবাপ্পে। করেছিলেন চার গোল। কাতার দেখেছে তেইশের পরিণত এমবাপ্পের আরও রুদ্ররূপ।

গতি, ক্ষিপ্রতায় প্রতিপক্ষের রক্ষণ ছিন্নভিন্ন করে গত আসরের চেয়ে এবার গোল করেছেন দ্বিগুণ। সর্বোচ্চ আট গোল করে জিতেছেন গোল্ডেন বুট। ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্টের (১৯৬৬) পর মাত্র দ্বিতীয় ফুটবলার হিসাবে বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করে রাঙিয়েছেন ইতিহাসের পাতা। শুধু সতীর্থদের ব্যর্থতায় বিশ্বকাপ ট্রফিতে আরেকবার চুমু আঁকতে পারেননি এমবাপ্পে।

গত পরশু রাতে লুসাইলে নাটকীয়তায় ভরা ফাইনালে ৩-৩ সমতার পর টাইব্রেকারে মেসির আর্জেন্টিনার কাছে হার মানে এমবাপ্পের ফ্রান্স। জোড়া গোল করা আর্জেন্টাইন মহানায়ক মেসির পাশে ছিলেন সহনায়ক দি মারিয়া ও এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। কিন্তু তর্কসাপেক্ষে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ফাইনালে ফ্রান্সের হয়ে যা করার একাই করেছেন এমবাপ্পে। শেষ দৃশ্যে হাসতে না পারলেও মেসিময় বিশ্বকাপে ফ্রান্সের প্রাণভোমরা বার্তা দিলেন, আগামী দিনের রাজা তিনিই। দুই বিশ্বকাপে ১২ গোল করে এমবাপ্পে উঠে গেছেন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় যৌথভাবে ষষ্ঠ স্থানে, পেলের পাশে।

পরের বিশ্বকাপেই তিনি মিরোস্লাভ ক্লোসাকে (১৬) ছাড়িয়ে উঠে যেতে পারেন চূড়ায়। বিশ্বকাপ ফাইনালে সর্বোচ্চ চার গোলের রেকর্ড এরই মধ্যে নিজের করে নিয়েছেন এমবাপ্পে। ফরাসি ফুটবলের ব্যাটন তার হাতেই তুলে দিচ্ছেন ফ্রান্স অধিনায়ক হুগো লরিস, ‘কাতার বিশ্বকাপে আমাদের একটি প্রজন্মের যাত্রা শেষ হলো। এমবাপ্পে দেখিয়ে দিয়েছে নতুন প্রজন্মকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত সে।’ এই এমবাপ্পেতে মুগ্ধ ফুটবলের রাজা পেলেও, ‘আমার প্রিয় বন্ধু এমবাপ্পে ফাইনালে চার গোল করেছে। আমাদের খেলাটির দর্শনীয় ভবিষ্যৎকে দেখাটা ছিল অসাধারণ এক ব্যাপার।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here