বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির ধুলা-ময়লা পরিস্কার করলো মুক্তিযোদ্ধার সন্তান

0
402

এম নজরুল ইসলাম দয়া: বিজয়ের মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সহ মুক্তিযোদ্ধা ভবন কমপ্লেক্স পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কাজ করে আলোচনায় এসেছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান জাহাঙ্গীর আলম। শুক্রবার সকালে ভবনের সামনে পরিচ্ছন্ন কাজে দেখা যায় তাঁকে। মুক্তিযোদ্ধা ভবনের কর্মচারি নন, নিজের দায়িতবোধে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তিনি ভবনের চারপাশ পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। তবে ভবনটি ছিল তালাবন্ধ। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জমে থাকা ধুলা-ময়লা পরিস্কারের ভিডিও এবং কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন স্থানীয় সংবাদকর্মীরা। চিত্রটি ভাইরাল হবার পর বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবন কমপ্লেক্সে আকস্মিক পরিদর্শণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন আখতার।

প্রাপ্ততথ্যে জানা গেছে, বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণ এবং উদ্বোধন হলেও এখনো চালু হয়নি। রক্ষনাবেক্ষনের জন্য নেই জনবল। ভবনটি চালু না হওয়ায় ঝুঁলছে তালা। সেখানে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও প্রশাসনের কর্তারা আসেননা বললেই চলে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা না থানায় ধুলা-ময়লার স্তুপে পরিনত হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সহ মুক্তিযোদ্ধা ভবন কমপ্লেক্স। ভবনের সামনেও ময়লা জমে থাকতে দেখা গেছে। বিজয়ের মাস শুরু হবার প্রথম দিন থেকেই ভবনের চারপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করছেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার আব্দুল হাকিমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। ভবনটির পাশেই রয়েছে এই মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের পানের দোকান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবন কমপ্লেক্স তালাবদ্ধ। তবুও মুল ভটকের প্রাচীর টপকে ভিতরে গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃৃতিতে জমে থাকা ধুলো-ময়লা পরিস্কার করছিলেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান জাহাঙ্গীর আলম। পরে ভবনের সামনের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার শেষে পানি ছিটানো হয়। মুক্তিযোদ্ধা ভবনের সামনেই দাঁ—িয়ে ছিলেন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিমের স্ত্রী এবং জাহাঙ্গীর আলমের মা আমেনা বেগম। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভবনের পাশেই চার ছেলে ও এক মেয়েসহ বসবাস করেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম প্রয়াত হবার প্রায় ৯ বছর। সন্তানদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম একটি চা-পানের দোকান করেছে মুক্তিযোদ্ধা ভবনের পাশে। আমেনা বেগম বলেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণের কয়েকবছর গেলো, এখনো চালু হয়নি। রক্ষনাবেক্ষনের জন্যও লোক নেই। এখানে কেউ আসেনা বললেই চলে। যেকারণে ভবনের চারপাশে ময়লা আবর্জনা থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর ছবিতে ধুলো জমে। আমি ভবনের পাশেই থাকি। ময়লা আবর্জনা চোখে পড়লে নিজেকেই খারাপ লাগে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী এখনো জীবিত আছি, আমার সন্তানরাও আছে। ডিসেম্বর মাস শুরু হবার একদিন আগেই আমার মেঝো ছেলে জাহাঙ্গীরকে ভবন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কাজ করার কথা বলেছি। সে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতা। আমি মনে করি, দায়িত্ববোধ আমাদেরও আছে। অন্তত এই বিজয়ের মাসটা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকুক মুক্তিযোদ্ধা ভবন।

প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দায়িত্ববোধ থেকেই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করছি। মুক্তিযোদ্ধা ভবনটি তালাবাদ্ধ। তাই যতটুকু সম্ভব পরিচ্ছন্ন করেছি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আয়নাল হক বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের দায়িত্ববোধ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। ভবনটি উদ্বোধনের পর থেকে চালু না হওয়ায় ধুলা-ময়লা জমে ছিল। বর্তমানে ভবনটি পরিচ্ছন্ন করায় ঝকঝকে দেখা যাচ্ছে। পরিদর্শনে এসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: শারমিন আখতার বলেন, ভবনটি বন্ধ থাকায় ময়লা আবর্জনা জমেছে। শনিবার ভবনের ভিতরে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ হবে। ভবনটি চালু করার ব্যবস্থা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here