ভাঙ্গুড়ায় নকল বিয়ে করে আট মাস ধর্ষণের অভিযোগ

0
481

নিজস্ব প্রতিনিধি:পাবনার ভাঙ্গুড়ায় নকল নিকাহ রেজিস্টার ও অ্যাডভোকেট দিয়ে বিয়ে পড়িয়ে গোপনে এক নারীকে আট মাস ধরে ধর্ষণ করেছে সুলতান মাহমুদ সুজন (৩১) নামে একজন বিবাহিত যুবক। একপর্যায়ে তার প্রথম স্ত্রী বিষয়টি জানতে পারলে সুজন ওই নারীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। সুজন ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের হারোপাড়া মহল্লার চৌধুরী পাড়ার আব্দুর রশিদ বাবলুর ছেলে। সে পাবনার রুপপুর পারমানবিক প্লান্টে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করত। ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসে। এ ঘটনায় ওই নারী সোমবার রাতে ভাঙ্গুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

প্রতারণার শিকার ওই নারী জানান, প্রথম স্বামীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় পরে সে ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের হারোপাড়া মহল্লার বিশ্বাসপাড়ায় নিজ বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন। একবছর আগে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের মাধ্যমে সুজনের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে রূপপুর পারমাণবিক প্লান্টে কর্মরত সুজন তাকে ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়। এরপর থেকে সেও ঈশ্বরদীতে বসবাস করতে শুরু করে। আটমাস আগে সুজন প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন করে নোটারি পাবলিকের অ্যাডভোকেট ও নিকাহ রেজিস্টারের মাধ্যমে তাকে বিয়ে করেন। পরে তারা দুজনই পরিবারের কাছে বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে ঈশ্বরদীতে একসাথে সংসার করতে থাকে। বিয়ের কিছুদিন পরে সে সুজনের প্রথম স্ত্রী থাকার বিষয়টি জানতে পারে। এনিয়ে তার (দ্বিতীয় স্ত্রী) সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয় সুজনের। পরিস্থিতি বেগতিক হলে সুজন প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এদিকে দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানার পর ভাঙ্গুড়ায় বসবাসরত প্রথম স্ত্রী সুজনের বিরুদ্ধে মামলা করার উদ্যোগ নেয়। এতে সুজন বেকায়দায় পড়ে তার (দ্বিতীয় স্ত্রী) সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। পরে সে দ্বিতীয় স্ত্রীর দাবি করলে তাকে নকল বিয়ে করা হয়েছিল বলে জানায় সুজন। বিষয়টি যাচাই করতে বিয়ে পড়ানো নিকাহ রেজিস্টার ও নোটারি পাবলিকের অ্যাডভোকেটের সন্ধান করা হয়। কিন্তু তাদের খুঁজে পায়নি সে। নিরুপায় হয়ে তিনি সোমবার রাতে ভাঙ্গুড়া থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের সহকারি উপপরিদর্শক রাজু আহমেদ বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে সুজন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি কোনো দ্বিতীয় বিয়ে করি নাই। এসব মিথ্যা কথা। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে ওই নারী এই অভিযোগ করেছে।’

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর মিজানুর রহমান জানান, বিয়ের নামে প্রতারণা করে আটমাস ধরে এক নারীকে ধর্ষণ করেছে তার মহল্লার বাসিন্দা সুজন। ন্যায় বিচার পেতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে আইনের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গুড়া থানার সহকারি উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু আহমেদ বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে সুজনের বাড়িতে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তাকে না পেয়ে তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান না হলে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here