রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের অনাগ্রহতা চরমে

0
428

নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। প্রথমদিকে রোহিঙ্গাদের বাঙালি আখ্যা দিয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চাইলেও তা নিয়ে অনাগ্রহ চরমে উঠেছে। রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত নিতে জাতিসংঘ এর সাবেক মহাসচিব কফি আনানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করা হয়। যা আনান কমিশন নামে পরিচিতি লাভ করে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আনান কমিশন ৮৮টি সুপারিশ করে। যার অর্ধেকও বাস্তবায়ন করেনি মিয়ানমার সরকার। বর্তমানে মিয়ানমার সরকার এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে নির্বিকার অবস্থান নিয়েছে। এমনকি রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে দণ্ডিত সাত সেনার সবাইকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা ‘জেনোসাইড’ এবং অন্যান্য গুরুতর অপরাধের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে মিয়ানমারের অনাগ্রহের প্রমাণ মিলেছে আরো একবার। তথ্যসূত্র বলছে, ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যের ইন দিন গ্রামে ১০ জন রোহিঙ্গা শিশু ও পুরুষকে হত্যা করে গণকবর দেওয়ার তথ্য বিশ্বের সামনে ফাঁস হওয়ায় মিয়ানমার বেশ চাপে পড়েছিল। এরপর ওই হত্যাকাণ্ডের দায়ে গত বছর সাত সেনার ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়ার কথা বিশ্বকে জানিয়েছিল মিয়ানমার। বার্তা সংস্থা রয়টার্স সোমবার (২৭ মে) এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলেছে, কারাগারে যাওয়ার সাত মাস পরই ওই সেনাদের মিয়ানমারের সেনা কর্তৃপক্ষ সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দিয়েছে। মিয়ানমারের কারাগারে ওই সেনাদের সঙ্গে বন্দি ছিলেন এমন দু’জন জানিয়েছেন, গত নভেম্বর মাসেই ওই সাত সেনাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে তারা ইন দিন গ্রামে হত্যাযজ্ঞের কারণে ১০ বছরের কারাদণ্ডের এক বছরেরও কম সাজা ভোগ করেছেন। সামরিক বাহিনীই তাদের সাজার মেয়াদ কমিয়ে দিয়েছে বলেও বিভিন্ন মাধ্যমের খবরে জানা গেছে। অবশ্য মিয়ানমারের কারা কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারে নতুন করে নিধনযজ্ঞ শুরুর পর হত্যার দায়ে এ পর্যন্ত ওই সাত সেনাকেই শুধু বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে। বাকি অভিযুক্তরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here