৩৭ বছর ধরে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে ভাঙ্গুড়া সচেতন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদ

0
309

ভাঙ্গুড়া(পাবনা)সংবাদদাতাঃ ‘পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই’এই প্রতিপাদ্যে ৩৭ বছর পূর্বে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সচেতন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদ যাত্রা শুরু করেছিল। তারই ধারাবহিকতায় জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে ভাঙ্গুড়ার সচেতন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদ নামের এই পাঠাগারটি। জ্ঞানের আলো বিকশিত হোক এই প্রত্যাশায় ব্যক্তি উদ্যোগে ১১ জন সদস্য মিলে ১৯৮৬ সালে এই পাঠাগারটির যাত্রা শুরু হলেছিল। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের বই মিলে ৫ হাজারের বেশি বই রয়েছে। কার্ডধারী পাঠকের সংখ্যা দুই হাজার সাতাত্তর। প্রতিদিন ৫ ধরনের পত্রিকা ও বিভিন্ন ধরণের বই পাঠক এখানে পড়ার সুযোগ পায়। ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ জনতা মিলে গড়ে প্রতিদিন ৪৫/৫০ জন পাঠক নিয়মিত এখানে এসে বই পড়েন। বর্তমানে ভাঙ্গুড়ার জ্ঞান পিপাসুদের প্রাণের স্পন্দনের প্রিয় একটি নাম হলো সচেতন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদ ।
১১ জন মিলে ৩৭ বছর পূর্বে ভাঙ্গুড়ায় একটি সংগঠন তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল বর্তমান যার নাম সচেতন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদ । ওরা ১১ জন হলো- মো. মঞ্জুর কাদের, মো. আব্দুল খালেক, মো. আলী আওয়াল বাবর, মনির আহমাদ, মো. আলতাব হোসেন, মো. রোজাইল করিম রোমিও,মো. হাসিনুর রহমান বাবু,মো. ওমর ফারুক রানা, মো. আবু সাইদ বাদশা, সরকার মহির উদ্দীন ও মো, আব্দুর রহিম। তখন ছিল তারা কলেজ শিক্ষার্থী। সকলে মিলে হাজী জামাল উদ্দীন ডিগ্রী কলেজের বাংলা বিভাগের আত্মপ্রত্যয়ী অধ্যাপক ও সাংবাদিক অবু জাফর মঈন সিদ্দিকী পরামর্শে ১৯৮৬ সালের কোন একদিন বিকালে সকলে মিলিত হয়ে এক সিদ্বান্তে এই সচেতন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদের যাত্রা শুরু হয়। সেই সময় আজকের স্থানীয় সাংসদ আলহাজ মো. মকবুল হোসেন তিনি তাদেরকে আর্থিক অনুদান ও সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে তাদের এই পথচলাকে আরও সুগাম করেছিলেন।
বর্তমানে ভাঙ্গুড়া বাজারের প্রাণ কেন্দ্র অবস্থিত এই লাইব্রেরী। একজন কেয়ার টেকার সার্বিক তত্ত্বাধান করেন। এখানে প্রতিদিন বইপ্রেমী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবী, শিশু-কিশোর প্রবীন ও সাধারণ জনতা জ্ঞানের আলো খোঁজ করতে আসেন। আবার কেউ চাইলে বিনামূল্যে সদস্য হয়ে কার্ড ইস্যুর মাধ্যমে ৭ দিনের জন্য বই বাসায় নিয়েও পড়তে পারে। আবার স্কুল কলেজের অনেক দরিদ্র ও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী এসেও বই পড়তে পারে। চাইলে যে কেউ বিনা মূল্যে এখানে এসে অনলাইনে সেবাও নিতে পারে। সরেজমিন দেখা গেছে, এই লাইব্রেরীতে,গল্প, নাটক,প্রবন্ধ,ইতিহাস,কবিতা,ভ্রমণ ও জীবন কহিনী,ছড়া, আইন ও তথ্য, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য, শিশুতোষ, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও আবিষ্কার ধর্মীয়, খেলাধুলা, কৃষি ও পশু পালন,অনুবাদ ইংরেজি সহ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমিক বই রয়েছে। সুন্দর মনোরম ও শান্ত পরিবেশে এখানে বই প্রেমী পাঠক বই পড়ছে।
এ সম্পর্কে সচেতন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বাবুল বলেন,শিক্ষা ও সংস্কৃতি আমাদের প্রাণের সাথে মিশে আছে, সেই চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ৩৭ বছর পূর্বে এই সচেতন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আগামী দিনেও এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও সচেতন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি মো. আবু সাইদ বাদশা জানান,একটি জাতির ঐতিহ্য, সাংষ্কৃতি প্রকাশ ও বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হলো সাহিত্য। মুক্ত চিন্তার বিকাশ ও সুস্থ্য সুন্দর আলোকিত সমাজ গড়ার মানসে আমাদের যাত্রা অব্যহত রয়েছে। তবে বই ও পাঠকদের আসনের কিছুটা সমস্যা রয়েছে। পৌর মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল বলেন, জ্ঞান চর্চার বাতিঘর ভাঙ্গুড়ার সচেতন সাহিত্য ও সাংস্কৃতি পরিষদ। ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের প্রাণ কেন্দ্র অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি জ্ঞানচর্চা, বিকাশ ও উদার চিন্তার মননশীল সমাজ গঠনে প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে বিশেষ ভুমিকা পালন করে আসছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here