পাবনা প্রতিনিধি : পাবনায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, সুষ্ঠ তদন্ত ও প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বেলা ১১টায় পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের ভাঁড়ারা গ্রামে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ভাড়ারা গ্রামের শত শত নারী পুরুষ অংশ গ্রহণ করেন। মানববন্ধনে আওয়ামীলীগ নেতা সিফাত আলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ¯ু‹ল শিক্ষিকা ইসমত আরা, আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল খান, আওয়ামী লীগ নেতা সুলতানের স্ত্রী হেমা খাতুনসহ স্থানীয় গ্রামবাসী।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, আগামী ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে ও ইতিপুর্বে জোড়া খুন থেকে নিজেদেরকে বাঁচাতে বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ তার লোকজন দিয়ে হুকুম আলীকে হত্যা করেছে।
গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তারা অভিযোগ করে বলেন, হুকুম খার ছেলে মগরব নিজে তার বাপকে হত্যা করেছে। হুকুম খাঁ’র স্ত্রী ও তার সন্তান মগরব খাঁ’কে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মুল রহস্য বেরিয়ে আসবে। চেয়ারম্যানের লোকজন ৯০ বছর বয়সি বৃদ্ধ মানুষকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করে একমাত্র প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান মাহমুদ খানের নামে মিথ্যা হয়রানিমুলক হত্যা মামলা দিয়ে ভাঁড়ারাবাসীকে এলাকা ছাড়া করে রেখেছে। তারা পাবনার স্থানীয় প্রশাসনসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে হুকুম আলীর প্রকৃত খুনিকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন। সেই সাথে সুলতান মাহমুদ খাঁসহ সকল আসামীকে হুকুম খাঁ হত্যা মামলা থেকে অব্যহতি দিতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর আওয়ামীলীগ নেতা সুলতান মাহমুদ খানের বাবা মহসীন আলী লস্কর খাঁ ও তার চাচা আব্দুল মালেক শেখকে দিনে দুপুরে গুলি করে হত্যা করে চেয়ারম্যান আবু সাঈদসহ তার বাহিনী। সেই মামলায় নিহত হুকুম আলীর ছেলে মগরব খাঁ ওরফে মগো জোড়া খুনের মামলার অন্যতম আসামী ছিলেন। হত্যা মামলা নং-২১, তাং-০৬-১২-২০১৮ইং। শুধু তাই নয় ২০১৬ সালে ১৮ মার্চ সুলতান মাহমুদ খানের বাড়ি পোড়ানো ও লুটপাট মামলার আসামী ছিলেন হুকুম আলীর ছেলে মগরব খাঁ মগো। এই দুটি মামলা থেকে বাঁচতে মগরব নিজের বৃদ্ধ পিতাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেন বলে দাবি করেন মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা।
উল্লেখ্য গত ৫জুন দিবাগত গভীর রাতে হুকুম আলীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্বরা। এদিকে হত্যার পর পরই একই এলাকার সুলতান মাহমুদ নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা ফেসবুকে লাইভে এসে অভিযোগ করেন, ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ ও তার লোকজন হুকুম আলীকে গুলি করে হত্যা করে চলে যায়।
তিনি লাইভে আরো বলেন, তাকে মুলত ফাঁসানোর জন্য এ হত্যাকান্ডটি ঘটানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন গত প্রায় দেড় বছর আগে তার বাবা লস্কর খাঁসহ ২জনকে গুলি করে হত্যা করে চেয়ারম্যান আবু সাঈদ ও তার লোকজন। সেই মামলা থেকে বাঁচতেই এ হত্যাকান্ড।
তিনি লাইভে আরো জানান, গত ৪/৫দিন আগে নিহত হুকুম আলী বাদী হয়ে তার (সুলতানসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্ল্যেখ করে) বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। এই মামলার বাদী হুকুম আলীকে হত্যা করে ঘটনাটি আমার (সুলতানের) ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা এবং জোড়া হত্যাকান্ড মিমাংসা করতে এ হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও ন্যায় বিচার দাবী করেন সুলতান মাহমুদ খান। ফেসবুক লাইভের সময় নিহত ব্যক্তির বাড়িতে অবস্থান করে হত্যাকান্ডটির বিচার দাবী করেন আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মাহমুদ খাঁ।
সুলতান খানের বাড়ি পোড়ানোর মামলায় ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাঈদকে প্রধান আসামী ও নিহত হুকুম খার ছেলে মগরেবকে অন্যতম আসামী করে সুলতান খান একটি মামলা দায়ের করেন। যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গত দেড় বছর পুর্বে সুলতান খানের বাবা লস্কর খাঁ ও তার চাচাকে দিনে দুপুরে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এই জোড়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় চেয়ারম্যান আবু সাঈদকে প্রধান আসামী ও মগরেবকে অন্যতম আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে সুলতান মাহমুদ খাঁ।
মগরেব খাঁ’র বাবা হুকুম আলী হত্যাকান্ডের ঘটনায় সুলতান মাহমুদ খানসহ ৩৮ জনের নাম উল্ল্যেখ করে নিহত হুকুম খা’র ছেলে জোড়া খুনের অন্যতম আসামী মগরব আলী খাঁ বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।