পাবিপ্রবি ভিসির দুর্নীতির তদন্তে ইউজিসি’র তদন্ত কমিটি

0
302

শফিউল আযম, বেড়া (পাবনা) সংবাদদাতা ঃ
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির নির্দেশে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর স্বেচ্ছাচারিতা,প্রশাসনিক ও আর্থিক দুর্নীতি তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন।এ জন্য ইউজিসি প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহেরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
পাবিপ্রবির শিক্ষকদের অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ইউজিসির মাধ্যমে ভিসি রোস্তম আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে শিক্ষা সচিবকে জানান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৫ ডিসেম্বর ২০ তােিরখের ৩৭.০০.০০০০.০৮০.১১০০১.১৭-২২৭ নং স্মারক চিঠির মুলে ইউজিিিস এ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগসূত্রে জানা যায়, ভিসি রোস্তম আলী যোগদানের পর থেকেই একের পর এক এই বিশ^বিদ্যালয়ে অর্থিক-প্রশাসনিক ও একাডেমিক অনিয়ম-দুর্নীতি করে চলেছেন। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে নির্মাণকাজে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে চাকরিচ্যুত প্রধান প্রকৌশলী আবদুর রহিমকে মাসিক লাখ টাকা বেতনে প্রায় পাঁচ-শ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ তদরকির জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ করা হয়।
কোনো দায়িত্ব পালন না করেই যোগদানের আগে সম্পন্ন হওয়া ভর্তি পরীক্ষা তহবিল থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা গ্রহণ, উপাচার্যের বাংলোকে গেস্ট হাউস দেখিয়ে নামমাত্র ভাড়ায় বসবাস করে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রায় ৯ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধন, বিশ^বিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামে উপাচার্যের একটি জিপ প্রাপ্যতায় কোটি টাকার জিপ থাকার পরেও আরও এক কোটি টাকা মূল্যের একটি জিপ ক্রয় করা। ২টি জিপের একটি নিজে এবং অপরটি পুত্রকে দেয়ায় বিশ^বিদ্যালয়ের একাকালীন এক কোটি এবং মেনটেনেন্স বাবদ আড়াই বছরে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা অপচয় করা, বিশ^বিদ্যালয়ের দশ বছর বয়সী আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট বন্ধ করে দেওয়া এবং সেই ইনস্টিটিউটে অ্যাডহকভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত দুই শিক্ষককের বেতন বন্ধ করা, পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগ ও পদোন্নতি দিতে বারবার নীতিমালা সংশোধন।
এছাড়া নিজের পুত্রকে নীতিমালা শিথিল করে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি আবদুস সোবহানকে রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য বানানো, শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে চেম্বার তছনছ করা, উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যক্তিগত ফাইল ঘেঁটে হয়রানি করা, বিশ^বিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করে ডিন-চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদে পছন্দের শিক্ষকদের বসিয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা নষ্ট করা, শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি, জাতীয় দিবসে অনুপস্থিত থাকা, ক্ষমতার অপব্যবহার করে কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে শিক্ষকদের শাস্তি প্রদান, প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে রাখা, শিক্ষককে রাজাকার পরিবারের সন্তান বলে অপবাদ দেওয়া, শহীদ মিনার নির্মাণসহ পাঁচ-শ কোটি টাকার উন্নয়নকাজে অনিয়ম, রূপপুরের বালিশ কা-ে যুক্ত ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া, রডের পরিবর্তে বাঁশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া, ১০ কোটি টাকার বইক্রয়ে কারসাজি করে টে-ার প্রদান, পরিবহণ খাতে অনিয়ম, পদোন্নতি নিয়োগে অনিয়মসহ পঞ্চাশের অধিক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবে ইউজিসি।
এজন্য অভিযোগকারী শিক্ষকদের আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি লিখিত ও মৌখিক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবে বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগকারী শিক্ষকদের একজন ড. এম আবদুল আলীম চিঠি পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করে ভিসি স্যারের সুনির্দিষ্ট অনিয়মের তথ্য ও কাগজপত্র দেখালে তিনি সচিব মহোদয়কেকে ইউজিসির মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। ইউজিসি আমাদের কাছে লিখিত বক্তব্য ও কাগজপত্র চেয়েছে। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটির কাছে আমার সেগুলো হস্তান্তর করবো। উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উল্লেখ্য যে, ইতিমেধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনও উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত চলমান রেখেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here