আজ রবিবার ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের মাহেন্দ্রক্ষণে হুয়াওয়ের প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় দেশে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের টেলিযোগাযোগ সেবা। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ফাইভজি যুগে এই পদার্পণ।
ফাইভজি প্রযুক্তি গ্রাহকদের দ্রুতগতির ইন্টারনেট ও ভয়েস কলের পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস, বিগডাটা, ব্লকচেইন, আইওটি, হিউম্যান টু মেশিন, মেশিন টু মেশিন ইত্যাদি প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ক্রিটিক্যাল মিশন সার্ভিস, স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট সিটি, স্মার্ট হোম, স্মার্ট ফ্যাক্টরি সুবিধা দেবে।
রাষ্ট্রীয় মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর, বাংলাদেশ সচিবালয়, সংসদ ভবন এলাকা, সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকা ও টুঙ্গিপাড়া—এই ছয় জায়গা ফাইভজি কাভারেজের আওতায় আনছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে এই ছয়টি স্পটে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে ফাইভজি।
মোস্তাফা জব্বার জানান, পরবর্তী সময়ে টেলিটক ঢাকা শহরের ২০০টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এ সেবা চালু করবে। আগামী বছর মার্চে বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ নিলামে দেওয়ার পর বেসরকারি তিনটি মোবাইল অপারেটর এই প্রযুক্তি চালু করবে। ২০২২ সালের পর টেলিটক ও বিটিসিএলের মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল, বিশেষ করে স্পেশাল ইকোনমিক জোনগুলোতে এই সেবা চালু করার প্রস্তুতির কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ভাচুর্য়ালি উপস্থিত থেকে এই ঐতিহাসিক যাত্রার শুভ উদ্বোধন করবেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের জন্য অহংকারের বিষয় হচ্ছে, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ এখনো ফাইভজি যুগে যেতে পারেনি, আমরা যাচ্ছি।’
ফাইভজি চালুতে টেলিটকের সহযোগী হিসেবে রয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি অবকাঠামো ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। এরই মধ্যে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সাইটে হুয়াওয়ে ও টেলিটকের যৌথ পরীক্ষায় ব্যবহারকারীদের জন্য ১.৫ জিবিপিএস পিক ইন্টারনেট গতি এবং ৭১০ মিলিসেকেন্ড ল্যাটেন্সির মতো ফলাফল পাওয়া গেছে বলে জানান হুয়াওয়ে বাংলাদেশের চিফ টেকনিক্যাল অফিসার কেভিন স্যু। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা টেলিটকের প্রথম ফাইভজি সাইটগুলোর মধ্যে ৬৫ শতাংশেরও বেশি সাইটে প্রযুক্তি প্রদান করছি।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলক কালের কণ্ঠকে বলেন, বর্তমানে দেশে ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, ৫২ হাজার ওয়েবসাইট, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারসহ এক হাজার ৫০০ ধরনের সেবা দেশের মানুষ গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, ১৩ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে, হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হয়েছে, ১০ কোটি মানুষ মোবাইল ফাইন্যান্সিংয়ের সুবিধা পাচ্ছে। এতে দুর্নীতি ও অপচয় দূর করে স্বচ্ছতা ও সততা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। দেশের ১৭ কোটি মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা পাচ্ছে।