ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনই হতে পারে সমাধান

0
344

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য রাষ্ট্র এবং বিশ্ব পরাশক্তির মতামত কিংবা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অধিকৃত ফিলিস্তিনে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা এখন দিন দিনই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দীর্ঘ সংঘাতময় অঞ্চলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নামে দুটি আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ক্রমেই যেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ইহুদিবাদী ইসরায়েলি শাসকদের সমগ্র ফিলিস্তিনি আরব ভূখণ্ড গ্রাস করার অব্যাহত ষড়যন্ত্র, রাজতন্ত্রের অধীনে আরব শাসকদের অসহযোগিতা এবং বিশেষ করে ইহুদি রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের অযৌক্তিক কূটনেতিক পদক্ষেপের ফলে ফিলিস্তিনবাসীর kalerkanthoমুক্তির প্রশ্নটি বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র ও শান্তিকামী মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলছে। এ কথা ঠিক যে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক সময়ের উপর্যুপরি জঙ্গিবিমান থেকে হামলা ও সাধিত ধ্বংসযজ্ঞের কারণে সরকারের (নেতানিয়াহু) পতন ঘটেছে। অবসান হয়েছে ইহুদিবাদী এবং সম্প্রসারণবাদী একটি অনৈতিক সরকারের। কিন্তু তাতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে না ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর কিংবা গাজার অবরুদ্ধ মানুষ। তাদের ধারণা, নয়া ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের শাসনের মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের বিগত ৭৩ বছরের ইতিহাসে আরেকটি নতুন ‘অন্ধকার যুগের’ সূচনা হতে যাচ্ছে। কারণ চরম কট্টরপন্থী বেনেট ফিলিস্তিনের স্বাধীনতায় মোটেও বিশ্বাস করেন না। দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল এই ব্যক্তির অধীনেই ফিলিস্তিনে দখলকৃত ভূখণ্ডে সবচেয়ে বেশি অবৈধ বসতি নির্মাণ করা হয়েছে। বেনেট নিজ মুখেই বলেছেন যে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় তিনি অসংখ্য ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছেন। বাস্তুভিটাহীন করেছেন অনেক ফিলিস্তিনি আরব বাসিন্দাকে। আর ইহুদি রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষার নামে অর্থ জোগান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার বিত্তশালী ইহুদি নাগরিকরা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রদত্ত সেই বিশাল অঙ্কের আর্থিক সহযোগিতা দখলদার ইহুদিবাদী সরকার সামরিক ও বেআইনি বসতি স্থাপনের কাজে লাগিয়েছে।

দখলকৃত ফিলিস্তিনের বিদ্বৎসমাজের ধারণা, সরকার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের শাসনব্যবস্থা দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়াশীলতা থেকে আরো উগ্রবাদিতার দিকে যেতে বাধ্য। নতুন ইসরায়েলের ইহুদিবাদীচক্রের রাজনৈতিক চাপে এই সরকার শেষ পর্যন্ত ভেঙে যাবে। নতুন সরকার ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের পরাধীনতার শিকল ছিন্ন করতে পারবে না। একমাত্র ফিলিস্তিনিদের বৃহত্তর ঐক্য ও অব্যাহত আপসহীন সংগ্রামই তাদের মুক্তির সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করতে পারে। সে কারণে দখলীকৃত পশ্চিম তীর কিংবা গাজায় ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সরকার পতনে ফিলিস্তিনিরা খুব আপ্লুত কিংবা কোনোভাবেই আশাবাদী হয়ে উঠতে পারেনি। তবে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি আরবরা মনে করে, সরকার পরিবর্তন কিংবা নবগঠিত জোট সরকারে তাদের অংশগ্রহণের কারণে সে রাষ্ট্রে বসবাস করার ক্ষেত্রে তারা বেশ কিছুটা নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে। তাদের দীর্ঘদিনের লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার কিছুটা বিহিত হবে। ইহুদিবাদী ইসরায়েলের ইউনাইটেড আরব লিগের নেতা মনসুর আব্বাস, যিনি গত সংসদীয় নির্বাচনে চারটি আসন পেতে সক্ষম হয়েছেন, তিনি মনে করেন, প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি আরব সমর্থিত তাঁর দল নতুন সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কিছুটা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সমর্থ হবে। নতুবা জোট সরকার থেকে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার এ সরকারের পতন ঘটাতে সাহায্য করবে। ইসরায়েলের ১২০ আসনবিশিষ্ট নেসেটে সরকার গঠন করতে অন্তত ৬১ জন নির্বাচিত সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন হয়। বর্তমান জোট সরকারের সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন বামপন্থী নেতা ইয়ার লাপিদ। তাঁর দল গত মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লাভ করেছে ১৭টি আসন। তিনি প্রস্তাবিত বর্তমান সরকারের চার বছর মেয়াদকালের মধ্যে দুই বছরের মাথায় নাফতালি বেনেটের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ভাগাভাগি করবেন। বেনেট, যিনি গত নির্বাচনে মাত্র ছয়টি আসন পেয়েছেন, তাঁর সঙ্গে রাজনীতি কিংবা আদর্শিক দিক থেকে লাপিদের কোনো মিল নেই। বেনেট চরম দক্ষিণপন্থী আর লাপিদ বামপন্থী। মধ্যখানে রয়েছে ফিলিস্তিনি আরবসহ অন্যান্য মতাদর্শের বেশ কিছু রাজনৈতিক দল, যাদের জোট সম্মিলিতভাবে লিকুদ পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ১২ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়েছে।

নবগঠিত রাজনৈতিক জোট সরকার গঠনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে নাফতালি বেনেটের সরকার তাঁর শাসনকালের দুই বছরের মধ্যে কোনো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে একতরফা হামলা চালাবে না এবং অবৈধভাবে বসতি নির্মাণ থেকে বিরত থাকবে। নাফতালি বেনেট যেখানে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না এবং গাজাসহ পশ্চিম তীরের সব ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলের পক্ষপাতী, তাঁর মতো একজন উগ্র দক্ষিণপন্থী ইহুদিবাদী নেতাকে একটি সমঝোতার মধ্যে আনতে পারাকে অনেকে বামপন্থী নেতা ইয়ার লাপিদের সাফল্য বলে মনে করেন। নেতানিয়াহুর শাসনকালের শেষ দিকে ইয়ার লাপিদ সংসদে বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। বর্তমানে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে (পশ্চিম তীরে) অবৈধভাবে নির্মিত বসতিতে তিন লাখেরও বেশি বহিরাগত ইহুদি বসবাস করছে। তা ছাড়া নেতানিয়াহুর শাসনের শেষ সময় পর্যন্ত তাঁর ইহুদিবাদী সরকার শুধু পশ্চিম তীরেই নয়, পূর্ব জেরুজালেমেও ফিলিস্তিনি আরবদের বসতি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদিদের অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছিল। তাতে ১৯৬৭ সালে সংঘটিত ছয় দিনের যুদ্ধে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করার আগে আরবদের যে নির্ধারিত সীমানা ছিল, তার প্রায় অর্ধেকেরও বেশি এখন সম্প্রসারণবাদী ইহুদিদের বসতিসহ বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা নির্মাণের কাজে চলে গেছে বলে রামাল্লাহ থেকে অস্থায়ী ফিলিস্তিন সরকার ঘোষণা করেছে। এটি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক আইনে সম্পূর্ণ বেআইনি। কিন্তু ইহুদিবাদীরা যত দিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা ও সমর্থন পাবে, তত দিন তাদের কোনো পরোয়া নেই। তাতে যথারীতি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড জবরদখল হতে থাকলে ভবিষ্যতে প্রস্তাবিত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের জন্য কোনো ভূমিই অবশিষ্ট থাকবে না। এ বিষয়টি পশ্চিমা শক্তির মধ্যে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান কিংবা ডেমোক্র্যাটদের কেউই বুঝতে চেষ্টা করেন না। ইহুদিবাদী ইসরায়েল সরকারের প্রায় সব বৈধ ও অবৈধ কাজে তারা আর্থিক সহযোগিতা ও রাজনৈতিক মদদ জুগিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের কথা মাঝেমধ্যে মুখে আনলেও তা বাস্তবায়নে তারা মোটেও শক্তিশালী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। এতে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অনিশ্চিত কিংবা দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ে।

আরব ভূখণ্ডের নির্ধারিত ফিলিস্তিনি অংশে অর্থাৎ ১৯৬৭ সালে ফিলিস্তিনিদের ওপর একতরফাভাবে চাপিয়ে দেওয়া ইহুদিবাদীদের যুদ্ধের আগে জাতিসংঘের ঘোষিত সীমানায় কবে একটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র হবে, তা এখনো কেউ জানে না। বিগত প্রায় ৫০ বছরের ওপর বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কথাবার্তা চলছে। ফিলিস্তিনি আরবদের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাত এ ব্যাপারে সমস্যা সমাধানের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও শেষ পর্যন্ত পারেননি। এরপর নানা সময়ে ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পশ্চিম তীরের রামাল্লাহভিত্তিক আল-ফাতাহ সমর্থিত সরকার ও গাজার গেরিলা বাহিনী হামাসের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মতবিরোধ শুরু হতে থাকে। বর্তমানে ফিলিস্তিনের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ রাজনৈতিকভাবে হামাসের সমর্থক। এ অবস্থায় সম্প্রতি নির্বাচন ঘোষণা করেও শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তা পিছিয়ে দিয়েছেন। সেটা নিয়েই সাম্প্রতিক সময়ে বিবাদ ও গাজায় জঙ্গিবিমানের হামলা শুরু, যাতে শিশুসহ প্রায় ২৫০ জন গাজাবাসী নিহত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে দালানকোঠাসহ বসতবাড়ি। গাজায় বসবাসকারী প্রায় ২৫ লাখ অধিবাসীর মধ্যে প্রায় এক লাখ মানুষ ঘরবাড়িসহ যাবতীয় সহায়-সম্পদ হারিয়েছে। হামাস সমর্থকরা পশ্চিম তীরের আল-ফাতাহ সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আব্বাসকে বিভিন্ন ব্যাপারে বিশ্বাস করে না। তাদের ধারণা, বৃদ্ধ মাহমুদ আব্বাস আন্দোলনের অযোগ্য হয়ে পড়েছেন। তিনি মার্কিন সরকার ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের অনেকটা তাঁবেদারে পরিণত হয়েছেন। তাই রমজানের সময় পূর্ব জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে নামাজ আদায়কারীদের ওপর ইহুদি সৈন্যরা নানাভাবে বাধা প্রদান ও আক্রমণ চালালেও আব্বাস কিংবা তাঁর ফাতাহ সমর্থিত সরকার কোনোভাবেই তীব্র প্রতিবাদ করেনি এবং একমাত্র সে কারণেই হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে বাধ্য হয়েছে বলে হামাসের মুখপাত্র জানিয়েছেন।

বিশ্বের ইহুদিবাদী নেতারা ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ফিলিস্তিনি আরব ভূখণ্ডে সমবেত হয়ে একতরফাভাবে তাদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ তাদের স্বীকৃতি প্রদান করে। সেই থেকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ইহুদিবাদী নেতারা ক্রমে ক্রমে স্থানীয় ফিলিস্তিনি আরবদের তাদের নিজ বাসভূমি থেকে উচ্ছেদ করে সমগ্র ফিলিস্তিন নামের ভূখণ্ডটি দখল করে নিতে সচেষ্ট হয়েছেন। তাঁদের সামনে কোনো যুদ্ধ কিংবা সংঘর্ষে নিজেদের দুর্বলতা ও শক্তির অভাবে পার্শ্ববর্তী আরব রাষ্ট্রগুলোও দাঁড়াতে পারেনি। তা ছাড়া ইহুদিদের প্রতি ছিল যুক্তরাজ্য ও বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন। বিশ্বব্যাপী ইহুদিবাদী আদর্শ ও প্রভাব প্রতিষ্ঠায় এই ক্ষুদ্র জাতিটি অত্যন্ত সংকল্পবদ্ধ। তারা তাদের ধর্ম, আদর্শ ও প্রভাব-প্রতিপত্তির সামনে বিশ্বের কোনো শক্তিকেই দাঁড়াতে দিতে রাজি নয়। খ্রিস্ট জন্মের প্রায় হাজার বছর আগে থেকে তাদের এ সংগ্রামের শুরু। ব্যাবিলন সম্রাট নেবুচাদনেজার খ্রিস্টপূর্ব ৫২২ বছরে জেরুজালেমে তাদের নির্মিত প্রথম টেম্পল ধ্বংস করে দেশ থেকে ইহুদিদের বিতাড়িত করেছিলেন। তারপর রোম শাসকরা তাঁদের দ্বিতীয় টেম্পল ধ্বংস করে সম্রাট হাড্রিয়ান ও পরে সম্রাট কনস্ট্যাটাইন তাদের জেরুজালেম থেকে বহিষ্কার করেন। সেটি ছিল ৬৬ থেকে ১৩৫ খ্রিস্টাব্দের সময়কার কথা। ইহুদিবাদীরা সব সময় রাষ্ট্রযন্ত্র কিংবা প্রশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তারপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির শাসক অ্যাডলফ হিটলার তাদের (ইহুদিদের) ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আবার খড়্গহস্ত হয়েছিলেন। এর ফলে জার্মানি, পোল্যান্ড ও অন্যান্য স্থানে ছয় লক্ষাধিক ইহুদিকে নিধন করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফিলিস্তিনি আরব মুসলিমরাই প্রথমে ইহুদিদের আশ্রয় দিয়েছিল। তারপর সেই ফিলিস্তিনি আরবদের এখন নিজ বাসভূমিতেই বন্দি করেছে ইহুদিবাদীরা। স্পেনে মুসলিম উমাইয়া শাসনের অবসান ঘটলে ১৬০৯ থেকে ১৪-এর মধ্যে লক্ষাধিক মুসলিম অধিবাসীকে হত্যা করা হয় এবং বাকিদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এর সঙ্গে ছিল অগণিত ইহুদি ধর্মাবলম্বী মানুষও। সেই অবস্থায় মুসলিমদের সঙ্গে ইহুদীদের পশ্চিম আফ্রিকার মরক্কোসহ অন্যান্য অঞ্চলে আশ্রয় দিয়েছিলেন তৎকালীন ইস্তাম্বুলভিত্তিক উসমানীয় মুসলিম শাসকরা। ইহুদিবাদীরা এসব মনে রাখে না। তারা বারবার আশ্রয়দাতার বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। ইতিহাস তার সাক্ষী। কিন্তু এখন দিন বদলের পালা শুরু হয়েছে। তাদের অবশ্যই এখন আরবদের সঙ্গে সহাবস্থানের নীতিতে বিশ্বাস করতে হবে। বুঝতে হবে ইসরায়েল ছাড়া বিশ্বে তাদের আর কোনো মাথা গোঁজার স্থান নেই। সুতরাং ফিলিস্তিনি আরবদের পূর্বনির্ধারিত কিংবা জাতিসংঘ স্বীকৃত স্থানে পৃথক রাষ্ট্র গঠনে ইসরায়েলকে সম্মত হতে হবে। নতুবা তার ধারাবাহিকতায় বিশ্বব্যাপী যে ক্ষোভ ও প্রতিহিংসা শুরু হবে, তাতে হয়তো ভেসে যাবে ইহুদিবাদী ইসরায়েলিরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here