ফুলজোড় কলেজ রোডে বালু ভর্তি খোলা ট্রাকের দাপটে পথচারী সহ শিক্ষার্থীরা বিপাকে

0
493

লিখন আহমেদ:
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ফুলজোড় কলেজ রোড নামে খ্যাত আঞ্চলিক সড়কটি বালু ব্যাবসায়ীদের কারনে আজ ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। ফুলজোড় কলেজ হতে বকুল তলা ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তাটি সবচেয়ে ভয়াবহ রুপ নিয়েছে বালু ভর্তি চলাচলের কারনে। লাইন দিয়ে বালু ভর্তি ট্রাক চলছে আর বালু উড়ে কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের চোখে মুখে ঢুকে পড়ছে। ট্রাক ও ড্রাম ট্রাকের আবাধ চলাচলে রাস্তার খোয়া উঠে অসংখ্য খানাখন্দ হয়ে জনসাধারনের চলাচলে ভোগান্তিতে রুপ নিয়েছে। অনেকেই ধুলার কারনে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। এ সড়কে ধুলাবালি এতটাই যে একটা ট্রাক গেলে সামনে আর কিছুই দেখা যায় না। ঘনো কুয়াশাকেও হার মানিয়েছে এ সড়কটির ধুলা বালি। দিনের বেলাতে যেন রাত বলে মনে হয়। শুধু তাই নয়, কলেজ হতে বকুল তলা ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তার ধারে বসবাসরত সাধারন মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তার পাশে গাছের পাতার রং সবুজ থেকে লাল হয়ে গেছে। ফুলজোড় কলেজ মোড়ের দোকানি সহ আশেপাশের মানুষ ঘরে বসে শান্তিতে ভাত খেতে পারছে না । এলাকাটি যেন ধুলার রাজ্যে পরিনত হয়েছে । ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় দিয়ে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী ও স্থানীয় ব্যাক্তিরা ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু তুলে ফুলজোড় কলেজ হতে বকুলতলা ব্রীজ পর্যন্ত ৬-৭টি পয়েন্টে কৃষি জমিতে বালু স্তুুপাকারে বেআইনী ভাবে ব্যবসা করছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এ ব্যবসা করে আসছে এবং বালু ভর্তি খোলা ট্রাকগুলো এ সড়ক দিয়ে দাফিয়ে চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হয় না। ফুলজোড় ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সাহেদ আলী জানান, সড়কটি এখন বালু ব্যবসায়ীদের দখলে। বালু ভর্তি খোলা ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলে শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় ডাক্তার শফিকুল ইসলাম জানায়, বালুু ভর্তি ট্রাকের অবাধ চলাচলে শিক্ষার্থী সহ পথচারীদের নাকে মুখে ধুলা ঢুকে শ্বাস কষ্ট, যক্ষা, হাঁপানী, চোখের সমস্যা, সর্দি ছাড়াও বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। ফুলজোড় ডিগ্রী কলেজের ছাত্রী শারমিন জানায়, বালুর ট্রাকের কারণে সড়কটি দিয়ে হাঁটা যায় না। পায়ে হেঁটে আসতে গেলে আমরা ধুলাতে একাকার হয়ে যাই। সড়কটিতে পানি দেয়া সহ কর্তৃপক্ষকে ট্রাক চলাচল বন্ধের দাবী জানায় সে। ইডিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম মদিনা জানান, এ সড়কে খোলা ট্রাকে বালু বহন করা পরিবেশের জন্য হুমকি এবং মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পদক্ষেপ নেয়া জরুরী বলে আমি মনে করি। ভ্যান চালক মোস্তফা, আলামিন, রফিক এবং সিএনজি চালক রাজু, মোখলেছ সহ অনেকেই জানায়, প্রচন্ড ধুলায় আমারা অতিষ্ঠ। সড়কে পানি দিতে বললে উল্টা আমাদের হুমকি দেয়। সরেজমিনে এসে না দেখলে কেউ বিশ্বাসই করবেন না। ফুলজোড় কলেজ মোড়ের দোকান্দার হায়দার আলী বলেন, এখানকার দোকান্দারেরা নিজ উদ্যোগে রাস্তায় পানি ছিটিয়ে ধুলাবালি নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করেছে। ধুলার কারণে দোকানে বসে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ক্রেতারা দোকানে এসে এক মূহুর্ত দাড়াঁতে চায়না। ফলে ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ কামনা করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here