আধুনিক নাগরিক সুবিধা পাচ্ছে ভাঙ্গুড়া পৌরবাসী

0
344

বিশেষ প্রতিনিধি:

মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেলের উদ্যোগে গত চার বছরে সড়ক সংস্কার, নতুুুন নতুন সড়ক নির্মাণ, পয়নিষ্কাশন ড্রেন নির্মাণ, নদীতে উঠানামার সিঁড়ি নির্মাণ, বিনোদনের জন্য পার্ক স্থাপন, সড়ক আলোকসজ্জিতকরণ, পানি নিষ্কাশনের জন্য কালভার্ট, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণণ স্থানে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও ডাস্টবিন স্থাপন, সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা নির্মাণ সহ নানামুুুখী উন্নয়ন কর্মকান্ডে পাল্টে গেছে পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভার চেহারা। মেয়রের একান্ত প্রচেষ্টায় মাত্র দুইবছরেই তৃতীয় শ্রেণীর একটি পৌরসভা স্বীকৃতি পায় প্রথম শ্রেণীতে। এছাড়া ভাঙ্গুড়়া উপজেলার সকল এলাকা থেকে মাদক দূর করতে শক্ত ভূমিকা নিয়ে জনসাধারণের ভূয়সি প্রশংসা অর্জন করেছেন মেয়র রাসেল।

জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে ভাঙ্গুড়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর তিনজন মেয়রের কার্যকাল শেষ হয়। এসব আমলে রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সাধিত হয়েছে। তবে একটি আধুনিক বাসযোগ্য পৌরসভা নির্মাণে জনগণের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। রাসেল মেয়র হওয়ার আগে পৌরশহরের জনগুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পৌরসভা ও পাবনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে টানাহেঁচরা ছিল। এতে শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছিল। এঅবস্থায় শহরের সড়কগুলো মেরামত না করে পৌর কর্তৃপক্ষ ও সওজ একে অপরের উপরে দায়ভার চাপাতো। ফলে দীর্ঘ সময় জনসাধারণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে চতুর্থবারের মতো ভাঙ্গুড়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ভাঙ্গুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাইন রাসেল জয়ী হয়। ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল।

এসময় ভাঙ্গুড়া পৌরসভা ঋণের ভারে জর্জরিত ছিল। পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পেতনা। কিন্তু মেয়র রাসেল দায়িত্ব নেয়ার পরই পাল্টে যায় পৌরসভার অর্থনৈতিক চিত্র। দ্রুত সময়ের মধ্যেই ঋণ পরিশোধ করে ভাঙ্গুড়া পৌরসভা নিজস্ব অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড়ায়। মেয়র রাসেলের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পেয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। রাসেলের প্রচেষ্টায় ভাঙ্গুড়া পৌরসভা দু’বছর আগে দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়। পৌরবাসী ভোগ করতে শুরু করে আধুনিক মানের নাগরিক সুবিধা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রাণকেন্দ্র ভাঙ্গুড়া বাজারের বকুলতলা (রেল চত্বর) এলাকা থেকে পাথরঘাটা ও জগতলা বাজার এবং উত্তর ও দক্ষিণ সারুটিয়া, শরৎনগর বাজার থেকে উপজেলা কার্যালয় পর্যন্ত অন্তত ১৫ কিলোমিটার ১০ ফুট প্রশস্ত সড়ক সংস্কার করে ১৮ ফুট প্রশস্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। গত অর্থবছরে এসব কাজ সম্পন্ন করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এছাড়া কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ভাঙ্গুড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে থানা মোড় পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক, শরৎনগর বাজারের ভদ্রপাড়া থেকে বড়াল রেল স্টেশন পর্যন্ত সড়ক সংস্কার ও পয়নিষ্কাশন ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে জন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আঞ্চলিক সড়ক সংস্কার, নতুন নতুন করে সড়ক নির্মাণ, পয়নিষ্কাশন ড্রেন ও সড়ক রক্ষায় গাইডওয়াল নির্মাণ কাজ চলছে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সোলার প্যানেলসহ বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া আরো নতুন নতুন সড়কে আলোক সজ্জিত করণের কাজ চলছে। শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে গুরুত্বপূর্ণ শতাধিক স্থানে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক ডাস্টবিন। শহরের ভাঙ্গুড়া ও শরৎনগর বাজারে জন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের বিনোদনের জন্য পৌরসভার উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে শিশু পার্ক। শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সের মানুষেরাও প্রতিদিন বেড়াতে আসে এই পার্কে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান উন্নয়নেও রাসেল সহযোগিতা করেন।পৌরবাসীর ধারণা, গত চার বছরের উন্নয়ন কর্মকান্ড আগামীতেও অব্যাহত থাকলে ভাঙ্গুড়া পৌরসভা যে কোনো জেলা শহরের পৌরসভাকে নাগরিক সুবিধার দিক থেকে ছাড়িয়ে যাবে। তাই পৌরসভার বাসিন্দারা আগামীতেও রাসেলকে মেয়র হিসেবে দেখতে চায়।

ভাঙ্গুড়া পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওমর ফারুক রানা বলেন, ‘রাসেল মেয়র হওয়ার পরে ভাঙ্গুড়া পৌরসভা স্বপ্নের মত পরিবর্তন হয়ে গেছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ সর্বস্তরের নাগরিক সুবিধা ভোগ করছে জনগণ। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড ভাঙ্গুড়ার তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে মেয়র রাসেল। তিনি আরো বলেন, রাসেল একজন দক্ষ রাজনৈতিক সংগঠক। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের ভিত আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক মজবুত হয়েছে। তাই এভাবে জনগণের ভালোবাসা পেয়ে রাসেলকে আগামীতে আরও উচ্চাসনে প্রত্যাশা করি।’

মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল বলেন, ‘পৌরবাসীর ভালোবাসা ও দাবীর মুখে আমি প্রার্থী হই। এরপর থেকেই পৌরবাসীর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমার স্বপ্ন একটি আধুনিক, মনোরম, শিক্ষা নগরী ও বাসযোগ্য পৌর শহর গড়ে তোলা। গত চার বছরে আমি সাধ্যমত শহরের উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। আগামী এক বছরেও আরো উন্নয়ন করে ভাঙ্গুড়া পৌরশহরের আরো চেহারা পাল্টিয়ে দিতে চাই। আমি আমার রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় এপর্যন্ত এসেছি। আগামীতেও তাদের ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here