পাবনায় বন্দুক যুদ্ধে নামে যুবককে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে মানববন্ধন

0
312

বেড়া (পাবনা) সংবাদদাতা ঃ
পাবনায় বন্দুক যুদ্ধের নামে যুবলীগ কর্মী তানজিবকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। গতকাল রোববার দুপুরে পাবনা শহরের টেকনিক্যাল মোড়ে প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ভিপি মাসুদের নেতৃত্বে এলাকার শত শত নারী পুরুষ এ মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে মেধাবী ছাত্র নিহত তানজিবকে কথিত বন্দুক যুদ্ধের নামে হত্যা করা হয়। নিহত তানজীব পাবনা জেলা স্কুলের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। এরপর পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে মাষ্টার্স পাশ করেন। স্থানীয় ভুমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করায় তারা পুলিশকে দিয়ে টাকার বিনিময়ে এ জঘন্য হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা তানজীব হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান।
তারা আরও বলেন, পুলিশ প্রশাসন তানজিব সর্ম্পকে তদন্ত ও যাচাই বাছাই না করে সম্পুর্ণ অন্যায়ভাবে তার গায়ে সন্ত্রাসী তকমা লাগিয়ে বন্দুক যুদ্ধের নামে গুলি করে হত্যা করে। নিহত তানজিবের কাছ থেকে ১টি পিস্তল ও ১টি রিভালবার ও তার নামে ৫টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ দাবী করলেও আসলে তানজিদের নামে মাত্র ২টি মারামারির মামলা রয়েছে। তানজিদের মা মলিনা খাতুন বলেন, পাবনায় বড় বড় সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী, রাঘব বোয়ালরা বীরদর্পে অন্যায় করে প্রকাশ্যে ঘুড়ে বেড়ালেও পুলিশ তাদের কিছুই বলছে না। পুলিশ শুধু আমার ছেলেকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হননি, তানজিবের নামাজে জানাযায় বাঁধা প্রদান করেন এবং তরিঘড়ি করে লাশ দাফনের জন্য চাপ দিতে থাকেন। পুলিশি বাধা উপক্ষো করে হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
নিহত তানজীবের মা আরও জানান, তানজিব শেখের ৪ দাদা রামচন্দ্রপুর মহল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা মকছেদ আলী সেখ, আকু শেখ, শেখ কোরবান আলী মেম্বর, ও আফছার আলী সেখ। একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানকে এভাবে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বন্দুক যুদ্ধের নামে হত্যা করে গোটা দেশ ও জাতিকে অপমানিত করেছে। যারা জীবনের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করেছে সেই দেশেরই পুলিশ বিনা অপরাধে তাদের পরিবারের সন্তানদের হত্যা করেছে।
নিহত তানজিব এর স্ত্রী মেঘনা খাতুন বলেন, ভুমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী প্রভাবশালী ও নদী খেকো দুধর্ষ সন্ত্রাসী আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে লক বাবু ও তার প্রভাবশালী দোসররা পুলিশকে টাকা দিয়ে বন্দুক যুদ্ধের নামে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। আমার স্বামীর পায়ের রগ কাটা ছিল এবং শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহৃ ছিল। তিনি এও বলেন, তানজিব তো পুলিশের কাছে আটক ছিল তাহলে বন্দুক যুদ্ধ করলো কেমনে।
নিহত তানজীব ছাত্রলীগ ও পরে যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। এছাড়া সে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের পরিবেশক ও একটি জেন্টস পারলার পরিচালনা করতেন। নিহত তানজীবের ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ বাবু, পৌর আওয়ামীলীগের সহ সাধারন সম্পাদক এনায়েত হোসেন দুলাল, আওয়ামীলীগ নেতা শেখ ইমরান ও রেজাউল করিম রেজাসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ৭ জুলাই বুধবার ভোর রাতে সদর উপজেলার শিবরামপুর বেড়িবাঁধ বটতলা এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে যুবক তানজিব শেখ নিহত হয়। সে শহরের রামচন্দ্রপুর মহল্লার বাবু শেখের ছেলে। পুলিশের দাবী নিহত তানজিবের বিরুদ্ধে বিস্ফোরকসহ ৫ টি মামলা রয়েছে, সে শহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here