অনলাইনে নয়, হাটেই ভরসা খামারি-ব্যবসায়ীদের

0
383

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ডিজিটাল ব্যবস্থায় পশু বিপণনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী ‘ডিজিটাল কোরবানির হাট’ উদ্বোধন করা হয়েছে। অনেকেই অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়ে আগ্রহী হলেও অধিকাংশ খামারি ও ব্যবসায়ীদের ভরসা চিরাচরিত হাটে। অনলাইনে বিক্রির সুযোগ থাকলেও তারা নিজেদের পশু হাটেই নিয়ে এসেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর শনিরঅখড়া হাট ঘুরে বিভিন্ন স্থান থেকে পশু নিয়ে নিয়ে আসা খামারি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

jagonews24

ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার মধ্যেও হাট শুরুর কয়েকদিন আগে নিজ নিজ পশু নিয়ে হাটে এসেছেন তারা। অন্যান্যবার আসার পথে চাঁদাবাজির মুখে পড়তে হলেও এবার এসেছেন বিনা বাধায়, শনিরআখড়া হাট কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি বিভিন্ন ঘাটে থেকে নিরাপদে পশু হাটে আনতে সহায়তা করছেন। আর সরকার অনলাইনে পশু বিক্রিতে উৎসাহিত করলেও হাটেই ভরসা তাদের। অনলাইনে বড় গরু বিক্রি করা কঠিন বলেও দাবি তাদের।

ফরিদপুরের লাকু মাতবর পাঁচটি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন মঙ্গলবার। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার পাঁচটা গরু নিয়ে আসছি। এখনো একটাও বেঁচা হয় নাই, বেঁচা হবে দুই-তিনদিন পর। অনলাইনে গরু বেঁচা যায়, কিন্তু বড় গরু বেঁচা যায় না। আর আমরা অনলাইন বুঝিও না। আমগো হাটই ভালো, সবগুলা গরুই বেঁইচা যাইতে পারমু। গতবারও সবগুলা বেঁচছি, এবারও সব বেঁচুম। আর রাস্তায় কোনো চাঁদা নেয় নাই। অন্যবারের চেয়ে নিরিবিলিভাবেই আইছি।’

jagonews24

গরুর খামারি বাবু ফকির বললেন, ‘আমার খামার থেকে ১৭টি গরু নিয়ে শনিরআখড়া হাটে আসছি। অনলাইন চালু হইলেও এটা আমি বুঝি না। পরে অনলাইনের আশায় থাইকা গরু বিক্রি না হইলে তো বিপদে পরব। সেজন্য হাটে নিয়ে আসছি। মাওয়া ঘাটে শনির আখড়া হাটের লোকজন আছে, তাই কেউ চাঁদাবাজি করতে পারে না, তারাই ঝামেলা ছাড়া হাটে আসার ব্যবস্থা করে। আর ঈদের তো এখনো কয়েকদিন বাকি, কাল বা পরশু থেকেই মানুষ গরু কেনা শুরু করবে।’

এদিকে শনিরআখড়া হাট ইতোমধ্যেই পশুতে অনেকটা পরিপূর্ণ। হাট শুরুর কয়েকদিন আগেই খামারি ও ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে হাটে এসেছেন। তারা আশা প্রকাশ করছেন নির্ধারিত সময়েই তাদের সব পশু বিক্রি হবে এবং লাভ নিয়েই তারা বাড়ি ফিরতে পারবেন।

jagonews24

শনিরআখড়া হাটের ইজারাদার মো. শাহ আলম জাগো নিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট পরিচালনার সব প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। আমাদের ফ্রি মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও পানির ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা সব নিয়ম মেনে হাট পরিচালনা করছি। আমরা ১৫ হাজার মাস্ক কিনেছি, এগুলো বিনামূল্যে হাটে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে বিতরণ করা হবে।’

অনলাইনে পশু বিক্রির ফলে এবার গরুর হাটে পশু বিক্রিতে প্রভাব পড়বে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনলাইনে পশু বিক্রির ফলে আমাদের হাটের পশু বিক্রিতে কোনো প্রভাব পড়বে না। আমাদের পশু আগের মতোই বিক্রি হবে বলে আশা করছি।’

jagonews24

জানা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৭ জুলাই থেকে ঢাকায় কোরবানির পশুর হাট বসবে। চলবে ঈদের দিন ২১ জুলাই পর্যন্ত। ইজারাদাররা পশু বিক্রি শুরুর দুদিন আগে হাটগুলো প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পাবেন। দুই সিটির ইজারা দেয়া ১৯টি অস্থায়ী হাটের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। তবে মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) রাত থেকেই হাটে ঢুকছে গরু।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here